বিবর্তনের পথে সৃষ্টির তালিকায় মানুষ যুক্ত হওয়ার অনেক আগে প্রকৃতি বনানী সৃষ্টি করেছে। জৈব বৈচিত্রের আঙ্গিকে এ গ্রহের জীব সৃষ্টির অনুকূল সব পরিবেশ প্রকৃতি উদ্ভিদ ও প্রাণী সৃষ্টি করেছে। গ্রহের এক-তৃতীয়াংশ জলরাশির বিশাল উপকুলভাগ বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি বা বালুকাতট হলেও উদ্ভিদ সৃষ্টির অন্তরায় হয়নি এমনকি তা গভীর সাগরের তলদেশেও বহাল তবিয়তে বিদ্যমান। কালপরিক্রমায় সময়ের স্রোতে মানব সভ্যতায় জীবন-জীবিকায় এ উদ্ভিদরাজির অবদান চিরভাস্বর; আর এ প্রকৃতি, পরিবেশ, কীট, পতঙ্গ, প্রাণী, উদ্ভিদ, জীব-বৈচিত্র ইত্যাদির মিলন সম্ভারেই আমাদের আগামীর স্বপ্ন ভেলা’র আবির্ভাব।



উদ্দেশ্যঃ

  • কৃষি পর্যটন নির্ভর দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক ছোঁয়াময় মোহনীয় সবুজাবৃত সুস্থ, নির্মল, নিরাপদ কৃষি গ্রামের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতঃ প্রকৃত প্রাকৃতিক আনন্দ-সুখানুভূতির নিশ্চয়তা প্রদান করা।

  • কৃষিতে টেকসই আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশকে উন্নত ও সুরক্ষাসহ পরম্পরা স্বাস্থ্যচর্চার আলোকে খাদ্য উৎপাদন করতঃ সবার জন্য নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থা করা।

  • আনন্দ-আয়োজনে আমাদের অবকাশ কেন্দ্রে অবস্থিত অতিথিবৃন্দের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানসহ প্রকৃত প্রাকৃতিক সান্নিধ্যলাভে সহায়তা করা।

  • আমাদের হিতকর প্রচেষ্টা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সংগ্রামী ব্যক্তি ও পরিবারসমূহের মৌল চাহিদা পূরণে একটি ভিন্নতা সৃষ্টি করা।

  • অন্তর্ভূক্ত প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারের জীবন মান উন্নয়নের মাধ্যমে তাঁদের প্রাত্যাহিক জীবনের সাথী হওয়া।



লক্ষ্যঃ

প্রকৃতির সৃষ্টি অপূর্ব সুন্দর; তাঁহার সাথে কারও তুলনা চলে না। আর কৃত্রিম সে তো মানব সৃষ্টি। সেখানে সৌন্দর্য নিজগুণে সৃষ্টি করতে হয়। যদি সুন্দর হয় তবে প্রত্যেকে বাহবা দেয়। আর যদি কোন কারণে সৌন্দর্যহানী ঘটে তা মানুষ ঘৃণা করে বা বঞ্চনার দৃষ্টিতে দেখে। এ সত্যের উপলব্ধি থেকে শিক্ষা গ্রহন করতঃ আমরা সমন্বিত হয়ে সততা/একতার মহানব্রত নিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যয়ে অংশিদারীত্বের ভিত্তিতে এই অর্থনৈতিক কল্যাণমুখী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি। সততাই আমাদের পাথেয়। সততা দিয়ে আমরা বিশ্বমানবের মণিকোঠায় স্থান পেতে চাই। আমরা অত্যান্ত দক্ষতা ও কৃতকার্যতার সহিত বিনিয়োগের বিপরীতে দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প গ্রহনের মাধ্যমে অধিক মুনাফা প্রাপ্তিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সৃজনশীল ভাবনায় আমরা অন্যদের থেকে ব্যতিক্রম। আমরা এ পৃথিবীকে সবুজের আবর্তে দেখতে চাই এবং সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করতঃ তাঁদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে সাথী হতে চাই। তাঁরা যাতে নায্যমূল্যে তাঁদের ভোগ্যপণ্য ক্রয় করতে পারে তাঁর নিশ্চয়তা দিতে চাই। এলক্ষ্যে আমরা স্থানীয় ও আমদানী/ রপ্তানীমুখী বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ঠতার সাথে সাথে দীর্ঘমেয়াদী কৃষিভিত্তিক শিল্প খামার গড়ে তুলতে সচেষ্ট। আমাদের অভিজ্ঞ সহযোদ্ধাগণ তাঁদের দক্ষতা ও কঠোর শ্রম দিয়ে আমাদের আগামীর চলার পথকে প্রসারিত করছে।

লক্ষ্য ছাড়া কোন আশা জাগে না। আমাদের লক্ষ্য অন্তর্ভূ্ক্ত ব্যক্তি ও পরিবারসমূহকে একটি ভাল জীবন-যাপনের ব্যবস্থা করে দেয়া। কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাঁদের দারিদ্র দূর করা। সবার জন্য নায্য মূল্যে নিরাপদ খাদ্য যোগানে সহায়তা করা এবং একটি সাহসিক মনোভাব ও অর্থনৈতিক চিন্তা-চেতনা জাগ্রত করা। তেজদীপ্তময় সাহসিক কঠোর পরিশ্রম, আনন্দ-বিনোদনের মাধ্যমে নিরাপদ উৎপাদনমুখী পণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ, সংগ্রহ, বিপণন, সেবা ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এমন একটা ব্যবস্থা সৃষ্টি করা যেখানে একজন ব্যক্তি তার পরিবারকে জীবন-যাপনের সকল প্রয়োজনীয় মৌলিক উপাদান তথা খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা ইত্যাদি প্রদান করে আত্ম-নির্ভরশীল হতে পারে। আমাদের গুরুত্বারোপ থাকবে সক্ষমতা অর্জনের দিকে যা ভবিষ্যতে একটি উন্নত পরিবার তৈরিতে অর্থনৈতিক অবকাঠামো রূপায়ণে সহায়তা করবে।



প্রারম্ভ ভাবনাঃ

অতি প্রাচীন কাল থেকেই এ জগৎ এবং মানুষের জীবন দর্শন কৃষিভিত্তিক। আমাদের পূর্বপুরুষেরা বাঁচার তাগিদেই বেশীরভাগই কৃষিকে জীবিকা হিসেবে নিয়েছিল এবং তাঁরা প্রাকৃতিক উপায়ে চাষাবাদ করে অধিক জীবনীশক্তি লাভ করত। প্রাচীনভাবনায় প্রাকৃতিক কৃষিই ছিল বাঁচার একমাত্র অবলম্বন। সম্ভবত: কৃষিই মানুষের প্রথম পেশা। কৃষি ও কৃষক আছে বলেই বসুন্ধরাতে আমরা আমাদের ঔধত্য প্রকাশে সক্ষম হয়েছি।

আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে জলবায়ু প্রভাব প্রকট আকার ধারণ করছে এবং সাথে সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত বাসস্থানের প্রয়োজনে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট, জীব বৈচিত্র ধ্বংসের মাধ্যমে কৃষিভূমি বা চাষ যোগ্য ভূমি হ্রাস পাচ্ছে যা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদার উপর প্রভাব ফেলছে আর এই অধিক খাদ্য চাহিদা পূরণে অতি মাত্রায় রাসায়নিক সংমিশ্রণে অধিক খাদ্য উৎপাদনের যাত্রা রচিত হয়েছিল কয়েকযুগ আগে থেকে কিন্তু সময়পরিক্রমায় প্রমাণিত হচ্ছে কৃষি জমিতে রাসায়নিক মিশ্রণের ফলে ভূমি তাঁর প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হারিয়ে কৃত্রিমতায় সৃষ্ট উৎপাদনে নির্ভর হয়ে মানবদেহের অবর্ণনীয় ক্ষতি সাধন করছে যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও কল্যাণকর নয় আর এক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। সময়ের চাহিদায় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের প্রয়োজনে গবেষকগণ প্রাকৃতিক উৎপাদনের গুরুত্ব অনুভব করছে ও উপদেশ দিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক বা জৈব কৃষি নির্ভর ভূমি ব্যবস্থাপনার; এজন্য প্রয়োজন প্রাকৃতিক সবুজ সার ও বালাইনিয়ন্ত্রণে সবুজ বনায়ন সংরক্ষণ ও সৃষ্টি এবং প্রকৃতির উপকারী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণ/ কীট এবং পশু-পাখি পালনসহ ইত্যাদি’র জৈব চক্রায়ন বা সংমিশ্রণে পারমাকালচার ভিত্তিক প্রাকৃতিক কৃষি নির্ভর শিল্পের প্রসার। আর এই পথ চলাকে সফল করতে হলে আমজনতাকে এগিয়ে আসতে হবে এবং এটা উপলব্ধি করতে হবে যে, প্রাকৃতিক শক্তিই খাদ্য উৎপাদনের প্রকৃত শক্তি আর প্রকৃতির মাঝেই আছে প্রাকৃতিক কৃষির সমাধান আর এ সত্য প্রতিষ্ঠায় আমাদের কণ্ঠস্বর ‌ ‘নিরাপদ খাদ্য ও সবুজ বনায়ন’।

আগামীর পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক না কেন আমরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আমাদের আগামীর দিন শুরু করতে পারি। আমরা আমাদের অতীত পরিবর্তন করতে পারি না। মানুষজন তাঁদের চরিত্র অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট পথে আচরণ করবে, আমরা তাও পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা কোন অনিবার্য ঘটনাও পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা কেবল একটি জিনিসই করতে পারি এবং তা হচ্ছে আমাদের মনোভাব ও চিন্তাশক্তি। আর এ পরিবর্তনের মাধ্যমেই আমাদের আগামীর যাত্রায় নিরাপদ খাদ্য ও সবুজ বনায়নের স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাতৃস্নেহশীল কৃষি পর্যটন শিল্প সমৃদ্ধ সবুজাভ কৃষি গ্রাম গড়ব।


MatriMaya Bangladesh
MatriMaya Bangladesh
MatriMaya Bangladesh
MatriMaya Bangladesh
MatriMaya Bangladesh
MatriMaya Bangladesh